শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে আলোচনা করতে ঢাকায় যাচ্ছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষামন্ত্রীর আহ্বানে তাদের পাঁচজন প্রতিনিধি শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) ঢাকায় রওয়ানা হবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তবে প্রতিনিধিরা আলোচনায় গেলেও অনশন চলবে বলেও জানিয়েছেন তারা।
শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন।
এ সময় মোবাইল ফোনের লাউড স্পিকারে তাদের সঙ্গে মন্ত্রীর আলাপকালে গণমাধ্যমকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
আলাপকালে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি শিক্ষার্থীদের বলেন, “আমরা চাই আমাদের সন্তানেরা ভালো থাকবে। তাদের যেন কষ্ট না হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসও ঠিক থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বায়ত্ত্বশাসনের ব্যাপার আছে। আমরা তাতে দ্রুত হস্তক্ষেপ করতে চায় না। তবে শিক্ষার্থীরা কষ্ট পাবেন এটাও চায় না।”
এ ছাড়া ফোনে আলাপকালে দীপু মনি বলেন, “সব সমস্যারই একটা সমাধান আছে। এই সমস্যারও নিশ্চয়ই সমাধান আছে। তবে আলোচনার মাধ্যমেই সেই সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।”
মন্ত্রী বলেন, “শিক্ষার্থীদের ৪/৫ জনের দল যদি আসেন এবং শিক্ষক সমিতির নেতারা যদি আসেন, তবে আমরা আলাপ করে একটা সমাধানে পৌঁছাতে পারবো।
মন্ত্রী আরও বলেন, আপনারা নিজেদের মধ্যে কথা বলে আসবেন, পরে নিজেদের মধ্যে যেন ঝামেলা না হয়।
শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলাপকালে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে সাদিয়া আফরিন বলেন, “আমরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলােচনায় আগ্রহী। আজ সন্ধ্যার আগেই আমাদের পাঁচজন প্রতিনিধি ঢাকায় মন্ত্রীর কাছে যাবেন। আমরা আলোচনা করে কিছুক্ষণের মধ্যে প্রতিনিধি ঠিক করবো। আশা করছি মন্ত্রী আমাদের দাবি মেনে নেবেন।”
তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় গেলেও আমাদের অনশন যথারীতি চলবে।
এর আগে বেলা দেড়টার দিকে শিক্ষামন্ত্রীর আলোচনার প্রস্তাব নিয়ে ক্যাম্পাসে আসেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আশফাক আহমদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেনসহ কয়েকজন নেতা। তারা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার পরই আওয়ামী লীগ নেতারা উপাচার্য ফরিদ উদ্দিনের বাসবভনে যান তার সঙ্গে আলাপের জন্য।
শফিউল আলম নাদেল সাংবাদিকদের বলেন, “এভাবে অচলাবস্থা দীর্ঘদিন চলতে পারে না। আমাদের সন্তানদের এই কষ্ট আমরা মেনে নিতে পারছি না।”
শফিউল আলম বলেন, “শিক্ষামন্ত্রীর বার্তা নিয়ে এখানে এসেছি। দুইপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সমাধানের পথ বের করার চেষ্টা করবো।”
উপাচার্যও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানান আওয়ামী লীগের এই নেতা।
পরে আওয়ামী লীগ নেতারা উপাচার্যের বাসভবনে আলাপ করে ফিরে আসার পর বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ শফিউল আলম চৌধুরীর মুঠোফোনে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল বাশার বলেন, “আমাদের একটাই দাবি-উপাচার্যের পদত্যাগ। এই দাবি আদায় না হলে আমরা আন্দোলন থেকে সরছি না। প্রয়োজনে আমরা মারা যাবো।”
এদিকে অনশনকারীদের মধ্যে অসুস্থের সংখ্যা বাড়ছে। বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উপাচার্য ভবনের সামনে অনশনে থাকা বাকি সবার হাতেও স্যালাইন চলছে। আর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরাও সেখানে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।
এছাড়া ডায়াবেটিকস থাকায় তাদের একজনের অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানা গেছে।